ইফতার সময় মতো করার ফজিলত ও পুরস্কার

লেখক:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, যতদিন মানুষ দেরি না করে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের উপরে থাকবে।’ হাদিসের দিকনির্দেশনায় এসেছে, দেরি না করে সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করায় রয়েছে বিশেষ মর্যাদা ও পুরস্কার। সেসব পুরস্কারগুলো কী?

দেরি না করে ইফতার করা সঙ্গে ইসলামের বিজয়ের সম্পর্কও জড়িত। ইফতারে দেরি করা হলো ইহুদি ও নাসারাদের স্বভাব। আবার ফেরেশতারা রোজাদারের ইফতারের অপেক্ষায় থাকেন। ইফতারের সময় ফেরেশতারা রোজাদারের জন্য রহমতের দোয়া করতে থাকেন। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় এসেছে-

 

১. হজরত সাহল ইবনে সাদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেনরাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনমানুষ যতদিন পর্যন্ত তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে।‘ (বুখারিমুসলিম)

২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যতদিন মানুষ তাড়াতাড়ি ইফতার করবে ততদিন দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে। কেননা, ইহুদি ও নাসারাদের অভ্যাস হলো ইফতার দেরিতে করা।’ (আবু দাউদ)

ইফতারের সময় রোজাদারের জন্য ফেরেশতাদের রহমত কামনা

৩. হজরত উম্মু উমারাহ রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের এখানে এলে আমরা তাঁর সামনে খাদ্যসামগ্রী পরিবেশন করলাম। তাঁর সঙ্গের কিছু লোক ছিল রোজাদার। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন- ‘রোজাদারের সামনে আহার করা হলে ফেরেশতাগণ তার জন্য (আল্লাহর) অনুগ্রহ কামনা করেন।’ (ইবনে মাজাহ)

৪. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদ বিন মুআয রাদিয়াল্লাহু আনহুর এখানে ইফতার করেন, এরপর বলেন- ‘তোমাদের এখানে রোজাদারগণ ইফতার করেছেন, নেককারগণ তোমাদের খাদ্যদ্রব্য আহার করেছেন এবং ফেরেশতাগণ তোমাদের জন্য রহমাত কামনা করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ)

 

রোজাদারের জন্য ইফতার হলো আল্লাহর পুরস্কার

রোজাদারের জন্য সবচেয়ে বড় সুসংবাদ বা আনন্দের মুহূর্ত হলো ইফতারকালীন সময়। হাদিসে কুদসিতে এ কথা বর্ণনা করেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। যাতে রোজাদার আনন্দের সঙ্গে সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে। হাদিসে কুদসিতে এসেছে-

৫. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, বনি আদমের প্রত্যেকটি আমল বৃদ্ধি করা হয়। আর প্রতিটি নেকি দশ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, সিয়াম (রোজা) ছাড়া। কেননা রোজা শুধুমাত্র আমার জন্যই; এবং আমিই তার প্রতিদান দেব। বান্দা আমর জন্যই তার কামনা-বাসনা ও পানাহার ত্যাগ করে। রোজাদারের দু’টি আনন্দ। একটি ইফতারির সময় আর অপরটি কেয়ামাতে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন তাঁর কসম! রোজাদারের মুখের গন্ধ কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে মেস্ক আম্বরের চেয়েও বেশি খোশবুদার। (বুখারি ও মুসলিম)

 

সুতরাং ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও পুরস্কার অর্জন করা প্রত্যেক রোজাদারের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের ওপর আমল করে রমজানের রহমত মাগফেরাত ও ক্ষমা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। ইফতারের বরকত, কল্যাণ, ফজিলত ও পুরস্কার পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments
error: Content is protected !!