যাদের চোখ নেই ও চক্ষুকোটর ফাঁকা থাকে, তারা সময়মতো সঠিক মাপের কৃত্রিম চোখ ব্যবহার না করার ফলে চক্ষুকোটরের চারপাশের মাংসপেশি সঙ্কুচিত হয়ে যায়। তাই চোখ হারানোর সঙ্গে সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি সঠিক মাপের ও রঙের আসল চোখের মতো দেখতে (অন্য কেউ বুঝতে পারবে না এমন) একটি কৃত্রিম চোখ প্রতিস্থাপন করা উচিত।
জন্মগত কিংবা কোনও দুর্ঘটনার জন্য যাঁরা নিজেদের একটি চোখ হারিয়েছেন বা কোনও কারণে চোখটি তুলে ফেলতে হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে চক্ষু প্রতিস্থাপন করলে তাঁদের মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেবে কৃত্রিম চোখ।
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন কৃত্রিম চোখ লাগালে মুখের অবয়বের কোনও তারতম্য হয় কি না? তাঁদের উদেশ্যে বলি কৃত্রিম চোখ লাগালে মুখের গড়নে কোনও অস্বাভাবিকতা আসে না বরং মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে আসে।
সাধারণত সর্বসাধারণের কথা চিন্তা করে রেডিমেড কৃত্রিম চোখ বা পাথরের চোখ তৈরি করা হয়। কিন্তু তা আলাদা আলাদা রোগীর চক্ষুকোটরের মাপ মতো হয় না এবং কৃত্রিম চোখটি ছোট-বড় হয়ে যায়, যা প্রতিস্থাপন করলে কৃত্রিমই মনে হয়। কিন্তু একটি কাস্টম মেইড কৃত্রিম চোখ রোগীর চক্ষুকোটরের মাপ নিয়ে তৈরি হয়, ফলে তা পাশের চোখের সমান। স্বাভাবিক নড়াচড়া করতে সক্ষম এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন।
প্রতিটি ব্যক্তির আইরিশ/চোখের মণির রং এবং সাইজ ভিন্ন, যা রেডিমেড কৃত্রিম চোখে হয় না; কিন্তু কাস্টম মেইড কৃত্রিম চোখ ব্যক্তির আসল চোখের মণির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করা হয়। কাস্টম মেইড কৃত্রিম চোখ স্কলেরা বা সাদা অংশের রং পাশের চোখের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করা হয়, যা ব্যক্তিবিশেষে সাদা, নীলাভ সাদা, লালাভ সাদা, বাদামি বা হলুদাভ হয়ে থাকে। রেডিমেড কৃত্রিম চোখ সাধারণত সাদাই হয়।
কাস্টম মেইড কৃত্রিম চোখে ক্যাপেলারি বা রক্তজালিকা বিন্যাস পাশের চোখের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিস্থাপন করা হয়, যা রেডিমেড চোখে তেমন পাওয়া যায় না। বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বাধুনিক কৃত্রিম চোখ প্রতিস্থাপন বিষয়ে যেসব চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে তা হলো–
বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বাধুনিক মানের যে কৃত্রিম চোখ পাওয়া যায়, তা শুধু নির্দিষ্ট রোগীর চক্ষুকোটরের মাপ নিয়ে আসল চোখের সমান, একই রঙের ও সাইজের আইরিশ বা চোখের মণি, রক্তজালিকা বিন্যাসসহ স্কলেরা বা চোখের সাদা অংশের সঙ্গের মিল রেখে তৈরি করা হয়। এটা স্বভাবিক, নড়াচড়া করতে সক্ষম ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। জার্মানি অ্যাক্রিলিক ফাইবার দ্বারা তৈরি বলে এটি হালকা ও উন্নতমানের।
দুর্ঘটনা বা ক্যানসারের জন্য চোখ, চোখের পাতা, চোখের পাপড়ি, আইভ্রু অপারেশন করে ফেলে দিতে হয়। এসব ড়্গেত্রে কৃত্রিমভাবে রোগীর ত্বকের রঙের সঙ্গে মিল রেখে (সিলিকন বেজড) চোখ, চোখের পাতা, পাপড়ি ও আইভ্রু প্রতিস্থাপন করা হয়।
শিশু রোগীদের ড়্গেত্রে তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চক্ষুকোটরও বড় হয়। তাই শিশুদের কৃত্রিম চক্ষু এমনভাবে তৈরি, যা ক্রমবর্ধমান চক্ষুকোটরের মাপ মতো নতুন চক্ষু না বানিয়ে বৃদ্ধি করা যায় বছরান্তে।