স্নাতক-স্নাতকোত্তরের পাট চুকিয়েছেন। এখন স্বপ্ন একটু সুন্দর ক্যারিয়ারের। নিজ নিজ পড়াশোনা, আগ্রহ থেকে তরুণরা তাদের পছন্দের চাকরিটি বেছে নেন। তবে এখনকার তরুণদের পছন্দের প্রথম সারিতে থাকে ব্যাংকিং পেশা। এই পেশায় বেতনটা হয় আকর্ষণীয়। সামাজিক সম্মান আছে। ক্যারিয়ারে উন্নতির সম্ভাবনা প্রচুর। সব মিলিয়ে তরুণদের পছন্দের প্রথম সারিতে এই ব্যাংকিং পেশা। তরুণ মেধাবীরা এই পেশায় এগিয়ে আসছেন খুব।
বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন পদে, বিভিন্ন পেশার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই এই খাতে ভবিষ্যৎ জীবন গড়া অতি সহজ। যে কোনো বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি থাকলে ব্যাংকে চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। কারও পছন্দের শীর্ষে থাকে সরকারি ব্যাংক, কারওবা বেসরকারি ব্যাংক। বাংলাদেশে ব্যাংকের সংখ্যা এখন ৫৬টি। সরকারি ব্যাংক চারটি। বাকি ৫২টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৯টি বেসরকারি। বিদেশি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন ব্যাংকও আছে বেশ কিছু।
-প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা:: ব্যাংকে চাকরিপ্রার্থীরা একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যান। তাদের লিখিত এবং মৌখিক দু’ধরনের পরীক্ষা দিয়েই নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়।
-প্রস্তুতি লিখিত পরীক্ষার:: ব্যাংকের প্রশ্নের ধরন সরকারি এবং বেসরকারি আলাদাভাবে হয়। ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, বিআইবিএম বা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট। এই পরীক্ষার ধরন- ১০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হবে। প্রশ্নপত্র দুটি ভাগে ভাগ করা থাকে। প্রথম অংশ নৈর্ব্যক্তিক, দ্বিতীয় অংশ রচনামূলক।
পরীক্ষার সময় তিন ঘণ্টা। নৈর্ব্যক্তিক অংশের প্রশ্ন হয় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান, কম্পিউটার, অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি, পাজল্স এবং ডেটা সাফিসিয়েন্সি থেকে। আর লিখিত বা বর্ণনামূলক পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে গণিত, ইংরেজি ও অ্যানালিটিকাল অ্যাবিলিটি থেকে। যারা পরীক্ষা দেবেন তাদের একটু খেয়াল লাখতে হবে, ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রশ্ন একটু ভিন্ন ধাঁচের হয়। সরকারি এবং ইসলামী ব্যাংকের প্রশ্ন ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলো প্রশ্ন করা হয় ইংরেজিতে।
-মৌখিক পরীক্ষা:: যারা লিখিত পরীক্ষায় টিকে যান, তাদের মুখোমুখি হতে হয় মৌখিক পরীক্ষার। মৌখিক পরীক্ষার সময় ১৫ মিনিট। এই সময়টুকুতে প্রার্থীর উপস্থিত বুদ্ধি, যোগাযোগ দক্ষতা, বিচার বিশ্নেষণ ক্ষমতা, নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা যাচাই করা হয়। মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিতদের মধ্যে প্রার্থীদের চৌকস দিকটির ওপর নিয়োগদাতা মূলত জোর দিয়ে থাকেন। এর সঙ্গে প্রার্থী যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন সে বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।
-যারা বাণিজ্যে:: স্নাতক ব্যবসায় প্রশাসনে যারা স্নাতক-স্নাতকোত্তর; ব্যাংকিং ক্যারিয়ার তাদের জন্য আকর্ষণীয়। ব্যবসায় প্রশাসনে যারা পড়াশোনা শেষ করেন তারা শুরুতেই ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেলের যে কোনো পদে চাকরি শুরু করতে পারেন। তবে আজকের এই তুমুল প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে একজন পরীক্ষার্থীকে নিজের স্বপ্নের ব্যাংকিং পেশায় নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী প্রস্তুতি। সেই প্রস্তুতি নিয়েই তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
-অন্যান্য বিষয়ে:: স্নাতক যারা অন্যান্য বিষয়ে যারা স্নাতক অর্থাৎ বিজ্ঞান-মানবিক বিভাগের তাদেরও প্রস্তুতি প্রয়োজন। বাংলা, ইংরেজি, গণিত বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি ব্যাংকের বিভিন্ন সাধারণ কর্মকাণ্ড ও পরিভাষার ওপর জ্ঞান রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, যে কোনো কাজে অগ্রসর হওয়ার জন্য নিজের ‘ইচ্ছা’ এবং ‘যোগ্যতা’কে বিবেচনা করে অগ্রসর হওয়া উচিত। তাই কেউ ব্যাংকিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে তাকে অবশ্যই এই পেশাটিকে নিয়ে প্রাথমিক কিছু বিশ্নেষণ করতে হবে।