অনেকে গ্র্যাজুয়েশান শেষ করেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না- ক্যারিয়ার কোন দিকে নেবেন। অথচ আপনাকে মাধ্যমিকে থাকতেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো। ফলে মাধ্যমিক পাস করেই ঠিক করতে পারেন, আপনি কোন পেশায় যেতে চান। যদি ইঞ্জিনিয়ার হতে চান তো ভর্তি হয়ে যান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সেমিস্টার ভিত্তিতে চার বছর মেয়াদি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারেন। পড়তে পারেন যেসব বিষয়-
-সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
-কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
-আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং
-মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
-ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং
-কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
-অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
-ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং
-এনভায়রনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং
-রেফ্রিজারেশন এ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং ইঞ্জিনিয়ারিং
-ইন্সট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড প্রসেস কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং
-টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং
করতে পারেন কৃষিতে ডিপ্লোমা
বাংলাদেশের কৃষিতে রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা। আপনি আপনার মেধা দিয়ে এই কৃষিকে আরও অনেক দূর টেনে নিতে পারেন। তাই পড়তে পারেন এই বিষয়ে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন সারাদেশে ১৬টি সরকারি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে চার বছর মেয়াদি ‘ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার’-এ ভর্তি হতে পারেন এসএসসি পাস করেই।
ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স এবং বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নানা বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স করে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। সেবার পথে সঁপে দিতে পারেন নিজেকে। মেডিকেলের যেসব বিষয়ে ডিপ্লোমা করতে পারেন-
-ডিপ্লোমা ইন প্যাথলজি (৩ বছর)
-ডিপ্লোমা ইন ফার্মেসি (৩ বছর)
-ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল (৩ বছর)
-ডিপ্লোমা ইন নার্সিং (৩ বছর)
-ডিপ্লোমা ইন রেডিওলজি (১ বছর)
-ডিপ্লোমা ইন ল্যাবরেটরি মেডিসিন (৩ বছর)
-ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল আল্ট্রা সাউন্ড (১ বছর) এবং
-ডিপ্লোমা ইন হোম স্টাডি কোর্স (১ বছর)
যদি টানে বন ও পরিবেশ
এসএসসি পাস করেই চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। এখানে ডিপ্লোমা করে সহজেই বন ও পরিবেশ রক্ষার কাজে নামতে পারেন। ডিপ্লোমা শেষ করলেই এখানে চাকরি মেলে অনায়াসে। বন অধিদপ্তর বসে আছে আপনার জন্য। যদি বন ও পরিবেশ আপনাকে টানে তবে চট্টগ্রাম ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে এ বিষয়ে পড়াশোনা করে বন বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
ফ্যাশন ডিজাইনার
ফ্যাশনে ভর দিয়ে চলে তারুণ্য। তাই তরুণদের অনেকেই এই পেশাকে আপন করতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। তবে পান না সঠিক দিকনির্দেশনা। চাইলে খুব অল্প সময়ে এ বিষয়ে পড়াশোনা করে ক্যারিয়ার গড়ে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে এক থেকে দুই বছরের বিভিন্ন কোর্স করেও নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারেন। তবে ডিপ্লোমা করে নিলে ক্যারিয়ারটা আরেকটু ভালো করে সাজানো যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইবিএর অধীনে ১ বছর ও ৬ মাস মেয়াদি ফ্যাশন ডিজাইন কোর্স করতে পারেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে করতে পারেন এর ওপর ডিপ্লোমা কোর্স।
ডিপ্লোমা ইন আইসিটি
তথ্যপ্রযুক্তি মানেই এখানে সরব ক্যারিয়ার। দেশ এখন যেন তথ্যপ্রযুক্তির ডানায় এগিয়ে চলেছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তি বা আইসিটি নিয়ে ডিপ্লোমা কোর্স করে অনায়াসে চাকরি তুলে নিতে পারেন নিজের ঝুলিতে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
দেশের গার্মেন্ট শিল্পের অবস্থান কোথায়, তা জানা আছে সবার। আমরা এই গার্মেন্ট শিল্প নিয়ে বরাবরই গর্ব করি। প্রতিষ্ঠিত ও আলোচিত এ শিল্পে নিজেকে ভালোভাবে জড়াতে চাইলে করে নিতে পারেন ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং। চাহিদার কথা মাথায় রেখে দেশে প্রতি বছর গড়ে উঠছে নতুন টেক্সটাইল কারখানা। এতে কদর বাড়ছে
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের।
সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়াশোনা শেষ করে চাকরির বাজারে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় তরুণদের। অথচ কর্মদক্ষ লোকের অভাব মেটাতে পারছে না অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই যারা একটু আগে থেকেই ক্যারিয়ারের কথা ভাবেন, তারা ডিপ্লোমার হাত ধরে নিজেকে ক্যারিয়ারের পথে এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারেন। ভর্তি হতে পারেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। দেশে বর্তমানে ৪৯টি সরকারি এবং ৩৮৭টি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়ছে। এসব প্রতিষ্ঠান বসে আছে আপনার জন্যই। আপনার ক্যারিয়ারের পথ সুগম করতেই যেন তাদের পথ চলা!