চাকরির ভাইভার জন্য যেমন প্রস্তুতি দরকার

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বর্তমান সময়ে তরুণরা চাকরিতেই বেশি আগ্রহী। জীবনের প্রথম চাকরির ভাইভা কেমন হতে পারে এই ভাবনায় অনেকেই আছেন। আমাদের এবারের আয়োজন চাকরির ভাইভাতে কেমন প্রস্তুতি দরকার তা নিয়ে। চাকরিপ্রাপ্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রায় চূড়ান্ত পর্ব ভাইভা। ভাইভা ব্যাপারটা প্রতিটি চাকরি প্রার্থীর জীবনেই বিভীষিকা হিসেবে দেখা দেয়। যদিও বিষয়টা অতটা জটিল কিংবা কঠিন নয়। একটু সচেতন হলে সহজেই ভাইভা বোর্ডের কঠিন দরজা পেরিয়ে আসা যায়। কীভাবে? অবাক হলেও সত্যি; একজন পরীক্ষক ভাইভা বোর্ডে আপনার জানার পরিধি পরীক্ষা করার চেয়ে যেসব বিষয়ের দিকে নজর দেন সেগুলো হচ্ছে-
আপনি কতটা বিনয়ী, কতটা আত্মবিশ্বাসী এবং বিভিন্ন পরিস্থিতি কতটা সামলে নিতে পারছেন। এই বিষয়গুলোতে আপনার পারফরম্যান্স ভালো হলে; ভাইভা বোর্ডে ভালো করতে পারবেন এটা সুনিশ্চিত। কয়েকটি বিষয় ভাইভা বোর্ডে প্রবেশের আগে লক্ষ্য করা উচিত্ আর এগুলো হলো-  অবশ্যই নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত করতে হবে ভাইভা বোর্ডে প্রবেশের আগে। পোশাক-আশাক, সাজসজ্জা, কাগজপত্র, পড়াশোনা ইত্যাদি বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে। ছেলেরা হালকা এক রঙের ফর্মাল শার্ট এবং প্যান্ট, পায়ে কালো রঙের ফর্মাল জুতা। গরমকাল হলে শুধু টাই আর শীতকাল হলে স্যুট এবং টাই হলে ভালো। মাথার চুল সুন্দর করে ব্রাশ করবেন। সব পোশাকই স্বাভাবিক হতে হবে। হালকা পারফিউম ব্যবহার করা যেতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি মেয়েরা হালকা রঙের শাড়ি পরেন। শাড়ি না পরে সালোয়ার-কামিজও পরা যায়। ওড়না পিনআপ করা ভালো। কড়া মেকআপ অবশ্যই নেতিবাচক হয়ে ধরা দিতে পারে! কমপক্ষে আধ ঘণ্টা আগে ভাইভা বোর্ডে হাজির হতে হবে। নিজেকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখতে হবে। আত্মবিশ্বাসী, হাসিখুশি ভাব নিজের চেহারায় ফুটিয়ে তুলতে হবে। ভাইবা বোর্ডে ঢোকার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আপনার ডাক পড়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফাইলে আছে। সেটা নিয়ে ভাইভা বোর্ডে প্রবেশের জন্য এগিয়ে যান। দরজায় গিয়ে ঢোকার অনুমতি চান। অনুমতি পেলে প্রবেশ করুন এবং সালাম দিন। চেহারায় থাকবে আত্মবিশ্বাসী ভাব। মুখে হালকা হাসি। তবে বোকা বোকা হাসি অবশ্যই নয়।
অনুমতি পেলে বসুন। বসার সময় চেয়ার টানাটানি করা যাবে না। হাঁটার সময় কিছুতেই যেন শব্দ না হয়। হাতের ফাইলটি সামনে রাখুন। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসবেন না। পিঠ সোজা করে, হাত দুটো পায়ের ওপরে আলতো করে রেখে বসবেন। কিছুতেই মুখ গোমড়া করে রাখবেন না। হাসিখুশি-প্রাণবন্ত থাকার চেষ্টা করুন। আপনি বসার পরেই আপনাকে প্রশ্ন করা হবে। সাধারণত শুরুতে টুকটাক প্রশ্ন করা হয়। যেমন- আজকের পত্রিকার শিরোনাম, খেলার খবর, বাংলা সনের কোন মাস, কোন তারিখ ইত্যাদি।
তারপর বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন, আপনার নিজের সম্পর্কে প্রশ্ন এবং সবশেষে আপনাকে করা হবে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশ্নগুলো। হয়তো হঠাত্ বলে উঠবে- আচ্ছা, আপনার শার্টে ক’টা বোতাম আছে বলতে পারবেন? তখন কিন্তু শার্টের দিকে তাকানো যাবে না। না তাকিয়েই উত্তর দিতে হবে। প্রশ্ন না পারলে আমতা-আমতা বা মনে পড়ছে না টাইপ ভাব ধরা যাবে না। সরাসরি বলে দিন যে, স্যার আমি বিষয়টা জানি না। ভাইভা বোর্ডের সব প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং প্রশ্ন শুনে ঘাবড়াবেন না বা বিচলিত হবেন না।
যখন কারও প্রশ্নের জবাব দেবেন, বডি ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করবেন না। অর্থাত্ হাত-পা নেড়ে কথা বলবেন না। আবার শরীর শক্ত করে বসেও থাকবেন না। শরীর স্বাভাবিক রেখে জবাব দিন।
এক সময় আপনাকে প্রশ্ন করা শেষ হবে। মানে আপনার ভাইভা শেষ। সামনে থাকা আপনার কাগজপত্র ভাঁজ করে ফাইলে নিন ও উঠে দাঁড়ান। তারপর সালাম দিন এবং দু’পা পেছনে এসে ঘুরে বের হন ভাইভার কক্ষ থেকে।
Facebook Comments
error: Content is protected !!