দক্ষ ম্যানেজারের ১০ গুণ

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ব্যবহার করা হয় গুগলের বিজনেস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এ। এখনও গুগলে ম্যানেজারদের প্রশিক্ষণে এই বিষয়গুলো শেখানো হয়।

২০০৮ সালে বিশ্বখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন গুগল একটি নতুন প্রজেক্ট হাতে নেয়। যার নাম ‘প্রজেক্ট অক্সিজেন’। এই প্রজেক্টের অধীনে গবেষকরা গুগলের সফল ও দক্ষ ম্যানেজারদের কর্ম পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেন। কী কারণে তারা দক্ষ ও সফল সেটি গবেষকরা খুঁজে বের করেন। এই গবেষণার ফসল হিসেবে দক্ষ ম্যানেজারদের ১০টি গুণ পেয়েছেন গবেষকরা।

এই গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল ব্যবহার করা হয় গুগলের বিজনেস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম-এ। এখনও গুগলে ম্যানেজারদের প্রশিক্ষণে এই বিষয়গুলো শেখানো হয়।

গুগলের গবেষণায় পাওয়া, একজন দক্ষ ম্যানেজারের ১০টি গুণ নিচে দেওয়া হলো :

১. ভালো একজন প্রশিক্ষক

দক্ষ ম্যানেজাররা শুধু নিজেদের তৈরি করেন না, তারা অন্যদেরকেও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলেন। দক্ষ ম্যানেজাররা সব সময় চেষ্টা করেন তার টিমের সবাই যেন দক্ষ হয়ে গড়ে ওঠে।

২. স্বাধীনতা দেওয়া

কাজের ক্ষেত্রে টিমের প্রতিটি সদস্যকে তার মতো কাজ করার স্বাধীনতা দেন একজন দক্ষ ম্যানেজার। তিনি টিমের ওপর ভরসা রাখেন এবং টিমের সদস্যদের বিকশিত হতে সাহায্য করেন।

৩. কাজের সঙ্গে সবাইকে সম্পৃক্ত করা

কোনো কাজ বা প্রোজেক্টের সঙ্গে টিমের সবাইকে সম্পৃক্ত করে নেওয়ার গুণ থাকে দক্ষ ম্যানেজারদের। এমন একটি পরিবেশ তারা তৈরি করেন যেখানে সবাই প্রশ্ন করতেপারে, নতুন আইডিয়া নিয়ে আসতে পারে এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ পায়।

৪. ফলাফলের জন্য কাজ করা

একজন দক্ষ ম্যানেজার সবসময় একটি লক্ষ্য আদায়ের জন্য টিমকে নিয়ে কাজ করেন। এবং ফলাফলের ভিত্তিতে কাজের মূল্যায়ন করেন। নির্দিষ্ট লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে তিনি সবাইকে চালিত করেন।

৫. যোগাযোগের দক্ষতা

একজন দক্ষ ম্যানেজার, দক্ষ সমণ্বয়কারীও বটে। বিভিন্ন সূত্র থেকে তার কাছে খবর আসে এবং তিনি সেই খবর সঠিকভাবে টিমের কাছে পৌঁছে দেন। তিনি যেমন নির্দেশ দেন তেমনি অন্যদের কাছ থেকে সমস্যাসম্পর্কেও মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং দ্রুত সমাধান করেন। টিমের প্রত্যেকটি মানুষ যেন তার কাছে এসে কথা বলতে পারে তিনি সে সুযোগ রাখেন। গবেষণায় দেখা গেছে, গুগলের অনেক ব্যবস্থাপকই যোগাযোগের ঘাটতির কারণে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।

৬. ক্যারিয়ারের উন্নয়নে জোর দেন

টিম কী দেবে সেটা চিন্তা না করে দক্ষ ম্যানেজার ভাবেন তিনি টিমকে কী দিতেপারেন। ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য টিমকে তৈরি করেন তিনি। টিমের উন্নয়নের জন্য যা করার দরকার সেটা করতে তিনি দ্বিধাবোধ করেন না। টিমের সদস্যদের কাছ থেকে তাদের পরিকল্পনা শোনেন, তারা কী করতে চান, কী শিখতে চান তা জানেন এবং তাদের ক্যারিয়ার ডেভলপমেন্টের জন্য যা যা করা দরকার সেই সহযোগিতা প্রদান করেন।

৭. নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং কার্যকর কর্মকৌশল ঠিক করা

একজন ম্যানেজার যদি ঠিক ভাবে না-ই জানেন তিনি কী করতে চান, তাহলে তিনি কখনোই সফলতা পাবেন না। একজন ম্যানেজারকে তার লক্ষ্য এবং লক্ষ্য অর্জনের কর্মকৌশল ঠিক করতে হবে। না হলে টিমকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না তিনি। কর্মকৌশল অনুযায়ী একজন দক্ষ ম্যানেজার টিমের সবার মাঝে দায়িত্ব ও কাজ বন্টন করেন।

৮. কাজ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান

একজন ম্যানেজারকে তার কাজ সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও কারিগরি জ্ঞান রাখতে হবে। আর এই জ্ঞান ও দক্ষতার কারণে টিমের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন। ফলে টিমের বাকি সদস্যরা তার নেতৃত্ব মেনে নিয়ে কাজ করেন।

৯. অন্যান্য টিমের সঙ্গে সমণ্বয় করে কাজ করা

শুধু নিজের টিমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকটি টিমের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হয় একজন দক্ষ ম্যানেজারকে। সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করলে ম্যানেজারের অভিজ্ঞতা যেমন বাড়ে তেমনি প্রতিষ্ঠানেরও উন্নতি হয়।

১০. সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা

বিশ্লেষণী ক্ষমতা উপকারী, কর্মকৌশল গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু একজন দক্ষ ম্যানেজারের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার কোনো বিকল্প নেই।  পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে কর্মকৌশল ঠিক করতে হবে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখতে হবে।

তথ্যসূত্র : ফোর্বস

Facebook Comments
error: Content is protected !!