ফ্যাশন ডিজাইনার হতে চাইলে

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

নিজের পোশাকটা নিজেই ডিজাইন করে ফেললেন। সেই সঙ্গে বন্ধুবান্ধব কিংবা আত্মীয়স্বজনেরটাও। এতদিন এই চলে আসছিল। এখন পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ভাবছেন বসে কী করা যায়? নিজের ক্যারিয়ারটা কীভাবে গুছিয়ে নেওয়া যায়। কিংবা সাফল্য-ব্যর্থতায় কোথায় দেখতে চান নিজেকে। এমনও হাজারো চিন্তা। মনে মনে স্বপ্নেরা উঁকি দেয়। হয়ে যান ফ্যাশন ডিজাইনার। নিজের স্বপ্নে পথে হাঁটাও হবে, আবার গোছানো হবে ক্যারিয়ারটাও। তো একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হতে হলে আপনাকে কী কী করতে হবে জেনে নিতে পারেন তা।

বর্তমানে ফ্যাশন ডিজাইনিং একটি জনপ্রিয় পেশা। ইতিমধ্যে পোশাক শিল্পে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। দেশজুড়ে হাজার হাজার গার্মেন্ট, বায়িং হাউস, ফ্যাশন হাউস আর বুটিক হাউস গড়ে ওঠার ফলে এসব খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা তৈরি হচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস, গার্মেন্ট শিল্প আর বায়িং হাউসে ফ্যাশন ডিজাইনার থাকে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই পদটি থাকা বাধ্যতামূলক। তাই সংশ্নিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করার পরই এই বিষয়ে চাকরি আপনার পথ চেয়েই বসে থাকে বলা যায়।

যদি আপনি ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা করেন তাহলে যে কোনো ডিজাইন হাউসে চাকরি পাওয়া যেমন খুবই সোজা হয়ে যায়, আবার নিজ উদ্যোগে গড়ে নিতে পারেন ফ্যাশন হাউস। এই পেশায় দেশের বাইরে গিয়েও চাকরি করতে পারেন।

পাশাপাশি দেশের জন্য কাজ করতে চাইলে যে কোনো ফ্যাশন কোম্পানিতে কাজ করা যাবে। এই সেক্টরে কাজ করলে বেতন অন্যান্য পেশার চেয়ে অনেক বেশি হয়ে থাকে। এই পেশায় আসতে হলে আপনাকে মানসিকভাবে কাজ করার সুন্দর মনোভাব থাকতে হবে।

যে পোশাকটি আপনি বানাবেন তা রুচিসম্মত হতে হবে। সেটা যেমন আপনার পছন্দমতো হতে হবে তেমনি ভোক্তারও যেন পছন্দ হয়। যখন একটি সৃষ্টিশীল কাজ আপনাকে মুগ্ধ করবে তখন তা মুগ্ধ করবে আপনার ভোক্তাকেও। সেই মুগ্ধতার ভিত্তিতে পোশাক বানিয়ে নিতে হবে। এই সেক্টরে কাজের প্রধান ধরনই হলো কাপড় নিয়ে গবেষণা করা। অন্যের জন্য মার্জিত নতুন কিছু তৈরির মাধ্যমে নিজেকে আধুনিকতার দিক দিয়ে এক ধাপ এগিয়ে রাখতে পারবেন। এ ছাড়া এই সেক্টরে ভালো আয় ও বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ থাকায় প্রতিনিয়ত আপনি আপনাকে গড়ে নিতে পারেন নিজের ইচ্ছামতো।

এই বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে কোথায় কোথায় চাকরি পাওয়া যাবে তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। বাংলাদেশে ফ্যাশন ডিজাইনারদের রয়েছে চাকরির বিশাল বাজার। এর মধ্যে টেক্সটাইল শিল্প, গার্মেন্ট শিল্প, বায়িং হাউস, বুটিক হাউস বা দেশের বড় বড় দেশি ও বিদেশি পোশাক ব্র্যান্ড হাউসে আপনার কাজের অনেক সম্ভাবনা নিশ্চিত থাকবেই। আর যদি পড়াশোনায় এই বিষয়ে আপনি খুব ভালো করতে পারেন, তবে যে কোনো প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে পেয়ে যেতে পারেন কাজের ক্ষেত্র।

ফাশন ডিজাইনিংয়ে পড়াশোনা

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইল

-শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (SMUCT)|

-বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (BUFT)|

-ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজি।

-ঢাকা ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন ইত্যাদি।

এ ছাড়া বিভিন্ন সংস্থায় ছয় মাস বা এক বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স রয়েছে। অন্যদিকে উচ্চ ডিগ্রির ক্ষেত্রে রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি, অ্যাপারেল ম্যানুফেকচার অ্যান্ড টেকনোলজি, নিটওয়ার ম্যানুফেকচার অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়গুলোর ওপর পড়াশোনা করতে পারেন।

আরও যা যোগ্যতা লাগবে

ফ্যাশন ডিজাইনার পদে কাজ করতে চাইলে শুধু পোশাক ডিজাইন করা নয়, পোশাকের ফেব্রিক, বুনন, কাপড়ের গুণাবলি, উপাদান, রঙ, নকশা এবং কাপড়ের ধরন বুঝে কখন তা পরিবর্তন হয় তা বুঝতে হবে। কাপড়ের ধরন বোঝার ওপর আপনার ক্যারিয়ারের সফলতা নির্ভর করে অনেকখানি। এ ছাড়া দেশভিত্তিক আবহাওয়া অনুযায়ী কাপড় তৈরি ও ডিজাইন করতে হয়। কারণ সব দেশের পোশাক এক হয় না। আবহাওয়া, সংস্কৃতি, উৎসব অনুযায়ী কাপড়ে ডিজাইন করতে হয়।

প্রতিটি পেশায় থাকে নির্দিষ্ট সুযোগ-সুবিধা। এই পেশাতেও আছে নানা সুযোগ-সুবিধা। ফ্যাশন নিয়ে, ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে কাজ করলে দেশে-বিদেশে বড় বড় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। নানারকম মেলায় নিজের পোশাক নিয়ে পসরা সাজাতে পারবেন। আর কাপড়ের মান কিংবা যোগাযোগ যদি খুব ভালো হয়, তবে সেই সুনাম ছড়িয়ে পড়বে সারাবিশ্বে। এখানে খেয়াল রাখতে হবে আসলে মানের দিকে। যখন আপনার কাজের মান ভালো হবে তখন ঠিকই প্রসার ছড়িয়ে পড়বে সবখানে।

Facebook Comments
error: Content is protected !!